আমি এখানে আমার দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতা আমি শেয়ার করি। আমি জানি ঢাকার বাসিন্দা ছাড়া আমার এই অভিজ্ঞতা যে কারো কাছে বাড়তি প্যাচাল বলেই মনে হবে। বাড়ি-৩৭৯, রোড-০৬, বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি, আদাবর ঢাকা - বাড়িতে ১ রুমের একটি ফলত ভাড়া দেয়া হবে। সাইন বোর্ড দেখে বাসা দেখতে গেলাম। একরুম বলতে একরুম-ই। দরজার উপরই বিস্তারিত নিয়ম লেখা আছে। এক কথায় কেউ একবার বাসা দেখতে আসলে কাউকে জিজ্ঞাসা করা লাগবে না। ভাড়া ৮০০০, পানি বিল ৬০০, গ্যাস বিল ৬৫০, সার্ভিস চার্জ ১১৫০, গাড়ি রাখলে আলাদা ২৫০০, মোটর সাইকেল রাখলে ১০০০, ২ বছর পর পর ২০% ভাড়া বাড়বে, ১ বছরের আগে বাড়ি ছাড়লে দেড় মাসের ভাড়া কেটে রাখা হবে, দুইমাসের বাড়িভাড়া আগাম দিতে হবে, দারওয়ান কে ভাড়াটিয়ার কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
এটা শুধুমাত্র একটা বাড়ির উদাহরন, তবে মোটেও ব্যতিক্রম বা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা না। ঢাকা শহরে ভাড়া থাকেন এমন ৯৫% লোক আমার সাথে একমত তো হবেনই, বরং জীবনে একাধিকবার এ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। একটু চিন্তা করে দেখুন,
- দারওয়ান কে ভাড়াটিয়ার কাজে ব্যবহার করা যাবে না, তাহলে সার্ভিস চার্জ কেন? কিন্তু কোনো ভাড়াটিয়ার বলার সাহস নাই যে, আমি সার্ভিস চার্জ দেবনা, আপনি দারওয়ান বিদায় করে দেন। এই সাহস দেখালে ওই ভাড়াটিয়া কোথাও বাসা ভাড়া পাবেননা।
- বাংলাদেশ বাদ দেন, পৃথিবীর কোথাও কি পানি ছাড়া বাড়ি ভাড়া দিলে কেউ ভাড়া নিবে? তাহলে পানিবিল আলাদা কেন?
- আলাদা গ্যারেজ ভাড়া নিলে ১২০০ টাকায় ভাড়া পাওয়া যায়। একজন ভাড়াটিয়া কেন মালিকের বাসায় ভাড়া থেকে ২৫০০ টাকা দিতে যাবে। আসলে এগুলো হলো সেচ্ছাচারিতা। ইচ্ছে হলে নেন নানিলে বিদেয় হন।
- ১ বছরের আগে বাড়ি ছাড়লে দেড় মাসের ভাড়া কেটে রাখা হবে কেন? তা না করে এক বছরের ভাড়া একসাথেই রেখে দিলে কেমন হয়?
- দুই বছর পর পর ২০% ভাড়া বৃদ্ধি বাংলাদেশের কোন আইনে আছে আমার জানা নেই, কোনো পাঠকের জানা থাকলে আমাকে সাহায্য করবেন প্লিজ।
আমি কাউকে হেয় করার জন্য এই লেখাটা লিখি নাই। আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে একটু হালকা হওয়াই আমার উদ্যেশ্য। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা যারা ভাড়াটিয়া তারা কেউ মানুষ না। হয় অতিমানব নতুবা অমানুষ। তা না হলে এত কিছু আমরা মুখ বুঝে সহ্য করি কিভাবে? নাকি আমাদের অপরাধ হচ্ছে ঢাকা শহরে আসাটা? কে জানে।
আপনি আরো পড়তে পারেন : অনলাইন টাকা
No comments:
Post a Comment